হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ

মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৩৬:০৯,অপরাহ্ন ০৫ ডিসেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ২৭১ বার পঠিতআজ ৬ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়েছিল হবিগঞ্জ জেলা শহর। একইদিনে মুক্ত হয়েছিল নবীগঞ্জ ও চুনারুঘাট উপজেলাও। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে হবিগঞ্জ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। মুক্ত হয় হবিগঞ্জ জেলা। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও হবিগঞ্জের অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের পুর্নবাসন ও বিরঙ্গনাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় তেলিয়াপাড়া ডাকবাংলো থেকে সারাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। ৩ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন মেজর শফিউল্লাহ। তার নেতৃত্বে হবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকার দুর্গম অঞ্চলগুলোতে পাকিস্তানিদের সঙ্গে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তিবাহিনী জেলা শহরের কাছাকাছি এসে পৌঁছে।
তখন মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ শুরু করেন তিন দিক থেকে। ৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে এবং ৬ ডিসেম্বর ভোর রাতে পাকসেনাসহ রাজাকাররা শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা মো. শাহাজাহান মিয়াসহ মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ সদর থানা কম্পাউন্ডে বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে জেলার ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধে আহত হন ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া নিরীহ অসংখ্য নর-নারী হানাদারদের নির্মম নিষ্ঠুররতার শিকারে শহীদ হন। এসব শহীদদের জন্য তেলিয়াপাড়া, ফয়জাবাদ, কৃষ্ণপুর, নলুয়া চা-বাগান, বদলপুর, মাখালকান্দিতে বধ্যভূমি নির্মিত হয়।
চুনারুঘাট : ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর রাতে চুনারুঘাটের সীমান্ত এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট তোরাব আলী খন্দকার, শামছুল হুদা, আব্দুল গফফারের নেতৃত্বে কয়েক শ মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা শহরে পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ করে। ৬ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তানিদের দোসর রাজাকাররা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আস্তানা গুঁটিয়ে নেয় এবং পাকসেনারা শ্রীমঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়। ৬ ডিসেম্বর সকালে তৎকালীন সিও অফিসের সামনে স্বাধীনতার লাল-সবুজ পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযোদ্ধা সানু মিয়া চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছামাদ পিসিও, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মন্নান সরকারসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা।
নবীগঞ্জ : একাত্তরের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা নবীগঞ্জ উপজেলাকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করেছিল। ৪ ডিসেম্বর ভোরে অর্ধশতাধিক সহযোদ্ধা রাজনগরসংলগ্ন নবীগঞ্জ-বানিয়াচঙ্গ সড়কের পাশে অবস্থান নেয়। তিন দিনব্যাপী আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ধ্রুব নামে এক কিশোর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়। ফটিক মিয়া, আব্দুল আহাদ ও ছাবু মিয়া নামে তিন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। এক পর্যায়ে পাকবাহিনীর রসদ ও গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে তারা ৬ ডিসেম্বর ভোরে পালিয়ে যায়। ওইদিন দুপুরে জনতা থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হয়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের সাবসেক্টর কমান্ডার মাহবুবুর রব সাদী পতাকা উত্তোলন করে নবীগঞ্জকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন।