মারা গেছেন হেফাজতের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী

মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:২০:৩৫,অপরাহ্ন ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ২৩৫ বার পঠিতমারা গেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় এ ইসলামি পণ্ডিত ও রাজনীতিবিদ রবিবার দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
দেশ রূপান্তরকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক।
শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা হওয়ায় ১ ডিসেম্বর কাসেমীকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর পর থেকে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে সম্প্রতি তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।
হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে নূর হোসাইন কাসেমী সংগঠনটির ঢাকা মহানগর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। নতুন কমিটিতে তিনি মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকা জামিয়া মাদানীয়া বারিধারার প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক।
কাসেমী ১৯৪৫ সালের ১০ জানুয়ারি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার চড্ডা নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় কাশিপুর কাশেমুল উলুম মাদ্রাসায় মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর ভর্তি হন বরুডার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসায়। এখানে হেদায়া জামাত (স্নাতক ২য় বর্ষ) পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে পড়ার উদ্দেশ্যে ভারতে গমন করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে না পেরে ভর্তি হন ভারতের সাহারানপুর জেলার বেড়ীতাজপুর মাদ্রাসায়। এখানে জামাতে জালালাইন (স্নাতক) সমাপ্তির পর দারুল উলুম দেওবন্দে চলে যান। দেওবন্দ মাদ্রাসায় তার অধ্যয়নকাল মোট ৩ বছর। এখানে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) সমাপ্তির পর আরবি সাহিত্য ও দর্শনে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন।
ভারতের মজফফরনগর জেলায় অবস্থিত মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মুরাদিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। এখানে ১ বছর শিক্ষকতার পর ১৯৭৩ সালের শেষ দিকে তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এরপর শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার নন্দনসার মুহিউস সুন্নাহ মাদ্রাসায় শায়খুল হাদিস ও মুহতামিম পদে যোগদান করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি ঢাকার জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় চলে যান। এখানে তিনি ৪ বছর শিক্ষকতা করেছেন এবং ছাত্রাবাস পরিচালক ছিলেন। ১৯৮২ সালে তিনি কাজী মুতাসিম বিল্লাহ প্রতিষ্ঠিত জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগে চলে আসেন।
১৯৮৮ সালে তিনি জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, ঢাকা এবং ১৯৯৮ সালে জামিয়া সোবহানিয়া মাহমুদ নগর প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানের শায়খুল হাদিস ও মহাপরিচালক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি প্রায় ৪৫টি মাদ্রাসা পরিচালনার কাজে যুক্ত ছিলেন।
চলতি বছরের ৩ অক্টোবর তিনি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত হন। আইন অনুসারে একই সঙ্গে তিনি আল হাইআতুল উলয়ার সহসভাপতি ছিলেন।