বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতিকে আরও সংহত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৫৬:৫৪,অপরাহ্ন ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ২০০ বার পঠিতপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতিকে আরও সংহত করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উভয় দেশ বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ভ্যালু-চেইন আরও সমৃদ্ধ করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, উভয় দেশ বিদ্যমান সহযোগিতামূলক ঐক্যমতের সুযোগ নিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে আরও সংহত করে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ভ্যালু-চেইন আরও সমৃদ্ধ করতে পারে।’
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারত ভার্চুয়াল সামিটের উদ্বোধনী ভাষণে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে গণভবন থেকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নয়াদিল্লী থেকে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত অতিক্রম করছে,’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশ ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এবং ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠারও ৫০তম বছরে পা রেখেছে।’
তিনি এ সম্পর্কে আরো বলেন, “আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন করছি। মাত্র কয়েক মাস আগে, আপনাদের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী আমরা উদযাপন শেষ করেছি।”
“বাংলাদেশে আমরা বাপুজির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে একটি বিশেষ ডাক টিকিট অবমুক্ত করেছি। আমরা আজ বঙ্গবন্ধুর সম্মানে ভারতের ডাক বিভাগের একটি স্ট্যাম্পের উদ্বোধন করবো,” বলেন তিনি।
এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলো যৌথভাবে উদযাপনের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে একত্রিত হওয়ায় তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার এবং জনগণের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারতের তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঢাকার সাথে নয়া দিল্লির সম্পর্ক আরো মজবুত করতে জোর দেয়া হয়েছে। দুই রাষ্ট্রনেতা যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। এ প্রসঙ্গে মোদি বলেন, ‘এটা আমার কাছে গর্বের যে, মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের উপর তৈরি ডিজিটাল প্রদর্শনী রিলিজ করছি আমি। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ওরা উদ্বুদ্ধ করতে থাকবেন।’
এর আগে, জ্বালানি, সামাজিক উন্নয়ন, কৃষিসহ সাতটি বিষয়ে সহযোগিতার লক্ষ্যে সাতটি কাঠামো চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ ও ভারত। বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
হাইড্রোকার্বন খাতে সহযোগিতা এবং হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প চালুর বিষয়ে দুটি কাঠামো চুক্তি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
হাতির সুরক্ষায় আন্তঃসীমান্ত অভয়ারণ্য তৈরি করতে একটি প্রটোকলে সই করেছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা।
কৃষি খাতে সহযোগিতা, বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং নয়াদিল্লি জাদুঘরের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সহযোগিতার বিষয়ে স্বাক্ষরিত হয়েছে তিনটি সমঝোতা স্মারক।
এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সিইও ফোরামের টার্মস অব রেফারেন্সও স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকর্তারা এবং ভারতের পক্ষে ঢাকায় দেশটির হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এসব নথিতে সই করেন।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী খালিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শীর্ষ বৈঠকে এসব নথি স্বক্ষরিত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।
বেলা সাড়ে ১১টায় তাদের এ বৈঠক শুরু হয়। শেখ হাসিনা ঢাকার গণভবন থেকে এবং নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে তার দপ্তর থেকে এ বৈঠকে অংশ নেন।