ভাঙা হবে টিএসসি চত্ত্বর, সমালোচনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:১৯:৫৩,অপরাহ্ন ২২ ডিসেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ২৮৯ বার পঠিতঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ভেঙে একটি আধুনিক ভবন নির্মাণ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। দেশের রাজনীতি ও সংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে জড়িয়ে থাকা এ সামাজিক ও কার্যকলাপ কেন্দ্রটির নতুন রূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনের আগেই দৃষ্টিনন্দিত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাবি প্রকৌশল দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। তবে এ নিয়ে সমালোচনার শুরু হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে।
গ্রিক স্থপতি ও পরিকল্পনাকারী কন্সটান্টিন অ্যাপোস্টলোস ডক্সিয়াডেস ১৯৬০ সালের শুরুতে টিএসসি’র নকশা করেন। পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খানের আমলে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।
চলতি বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহবাগ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত গোটা এলাকা দৃষ্টিনন্দন করতে এখানকার প্রধান প্রধান ভবন ও স্থাপনা নান্দনিক নকশায় নতুন করে নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেন। গত ২ সেপ্টেম্বর সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর (পিডব্লিউডি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক), টিএসসি ও শাহবাগ পাবলিক লাইব্রেরিকে আধুনিকীকরণের কাজে এগিয়ে আসে।
শেখ হাসিনা সেদিন বলেছিলেন, ‘যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ভবন তৈরি করা হয়, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনেক কম ছিল। বর্তমানে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী বেড়েছে, তাই টিএসসি ভবনকে আধুনিক পদ্ধতিতে নতুন করে গড়তে চাই।’
প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর টিএসসি ভবন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯৬৪ সালে টিএসসি নির্মিত হয়েছিল। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮০০, শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ২০০ থেকে কিছু বেশি। এটাকে বিবেচনায় রেখে এটুকু জায়গায় টিএসসির ভবন, মিলনায়তন ও ফ্যাসিলিটিজ তৈরি করা হয়েছিল। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজারের বেশি শিক্ষক আর ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আছেন। কিন্তু টিএসসি আগের মতোই আছে। প্রধানমন্ত্রী সেজন্যই আমাদের এটা পুনর্বিন্যাস করার নির্দেশনা দিলেন।
ঢাবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আব্দুল মান্নান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, সরকারের গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছিলেন, এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকের প্রকল্প হবে। টিএসসি ভবন পুরোপুরি ভেঙে এটি তৈরি করা হবে। পিডব্লিউডি’র সঙ্গে হওয়া শেষ সাক্ষাতে তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় তালিকা জমা দিয়েছি। তারা জানিয়েছেন, তাদের কাজ চলছে। নতুন নকশা আসার পর কাজ শুরু হবে।
কেমন হবে নতুন টিএসসি :
ষাটের দশকের সেই পুরোনো টিএসসিকে আর দেখা যাবে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। নতুর রূপে প্রকাশ পাবে ঢাবির টিএসসি। টিএসসি’র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলি আকবর নতুন টিএসসি প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি তালিকা দিয়োছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগকে। পরবর্তীতে সেটি পিডব্লিউডি’কে দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, সেখানে নতুন যেসব সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মহড়াকক্ষ, জিমনেশিয়াম, টিএসসি-ভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক দলগুলোর জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত কক্ষসমূহ, আন্তঃক্রীড়া কক্ষ, আলাদা ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষক মিলনায়তন, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা বিশিষ্ট স্থান, অতিথি কক্ষসহ থাকবে দুই বা তিনতলা বিশিষ্ট সুইমিংপুল কমপ্লেক্সে।
আলি আকবর বলেন, তিনটি অডিটোরিয়াম থাকবে, যার একটিতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ জনের বসার ব্যবস্থা ও অন্য দু’টিতে ৩০০ জন করে ধারণক্ষমতা থাকবে।