মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ‘অবিচারের শিকার’

মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:০১:০১,অপরাহ্ন ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ২০৮ বার পঠিতমালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আশরাফুল গণি। গত ৬ নভেম্বর স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। এ সময় পাসপোর্ট না থাকার অভিযোগ মালয়েশিয়ান পুলিশ তাকে আটক করেন।
আশরাফুল পুলিশ কর্মকর্তাদের জানান, তিনি সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রিতে পড়ালেখা করছেন। প্রমাণস্বরূপ তার ছাত্র কার্ডও দেখান। তিনি বলেন যে, ভিসার নবায়ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পাসপোর্টটি জমা দেয়া হয়েছে।
তবে পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুলের কথা বিশ্বাস না করে দেশটির ইমিগ্রেশন আইন অনুযায়ী তাকে হাজতে পাঠায়। কিন্তু তাৎক্ষনিক আশরাফুলকে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করেননি।
গত ১৩ নভেম্বর তাকে ১০ দিন আটক রাখার পরে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালতে তার বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় থাকার অনুমতিপত্র না থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ইমিগ্রেশন আইনের ধারায় এটি একটি অপরাধ, যার জন্য অর্থদণ্ড বা কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
আদালতে আশরাফুলেরপক্ষে মামলা লড়েন আইনজীবী রাজপাল সিং। তিনি বিদেশি শিক্ষার্থীর প্রতি এটি অবিচার উল্লেখ করে মালয়েশিয়ান বিচার ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেন।
এরআগে আরো এক বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় ব্যাপক হয়রানির শিকার হয়েছেন। অভিবাসীদের সঙ্গে সরকারের আচরণ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরায় একটি সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন বাংলাদেশি যুবক রায়হান কবির। এর জেরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে কারামুক্ত হয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
রাজপাল সিং তার মক্কেল আশরাফুলকে জামিন দেয়ার বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলাটিকে অবিচারের ক্ষুদ্রাকর্ষণ হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি দাবি করেন বিনা কারণে তার মক্কেলকে ৩ সপ্তাহ বেন্টং কারাগারে আটক রাখা হয়।
এ ঘটনায় জামালুল্লাহিল নামে আশরাফুলের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্টুডেন্ট এফেয়ার্স বিষয়ক বিভাগের প্রতিনিধি তার পাসপোর্ট সি পার্ক থানায় হস্তান্তর করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ভিসা নবায়নের জন্য আশরাফুলের পাসপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা রাখা হয়েছিল। আদালতে জামালুল্লাহিল পাসপোর্ট এবং নবায়ন হওয়া ভিসা উপস্থাপন করেন। পরে ২৫ নভেম্বর পরীক্ষার জন্য ৬০০ আরএম অর্থদণ্ড দিয়ে আদালত আশরাফুলকে জামিন দেন। তবে প্রতি মাসে একবার তাকে আদালতে হাজিরা দেয়ার আদেশ দেন আদালত।
আশরাফুলের আইনজীবী প্রসিকিউশনের চ্যালেঞ্জকে হাস্যকর বর্ণনা করে বলেন, জামালুল্লাহিলের পাসপোর্ট সমর্পণ করার অর্থ তার মক্কেল কোনো অপরাধ করেননি। তাই জরিমানা দেয়া সম্পূর্ণ অবিচার।
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর হাইকোর্টে আশরাফুলের জামিন দেয়ার ম্যাজিস্ট্রেটের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য একটি সংশোধনী দায়ের করেছেন।
সূত্র- ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে নিউজ