সুনামগঞ্জের গ্রামগঞ্জে মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি
মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ২:১৮:১৩,অপরাহ্ন ০৫ আগস্ট ২০২১ | সংবাদটি ২৮৭ বার পঠিতসুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের গ্রামে গ্রামে কোথাও মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি। দোকানে দোকানে চলছে উঠতি বয়েসীদের আড্ডা আর বিভিন্ন খেলা। এ কারণেই পল্লী গ্রামগুলোর প্রায় ঘরেই সংক্রমিত হচ্ছে জ্বর ও সর্দি কাশি।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা গ্রাম্য হাট-বাজারে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব ঠিকমত মানা হচ্ছেনা। করোনায় মৃত্যুর হার ও নতুন রোগী শনাক্তের দিক বিবেচনায় দেশে প্রতিনিয়ত রেকর্ড গড়লেও সচেতন কিংবা অসচেতন, শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত, তরুণ কিংবা বয়স্ক অধিকাংশ-ই সরকারের আরোপিত বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চায়ের দোকানে আগের মতো জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, মুখে মাস্ক ব্যবহার না করেও হাটবাজারে সব সময়ই ঘোরাঘুরি করছেন। উঠতি বয়সী তরুণদের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অহেতুক রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি করার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। আবার বয়স্কদের বেশিরভাগই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে এখনো তেমন সচেতন হয়ে উঠেননি। ফলে মুখে মাস্ক ব্যবহার না করা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখায় গ্রামগুলোতে করোনার প্রাদুর্ভাব সামনে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে এমনটি আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞ মহল।
জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, তাহিরপুর, দিরাই, শাল্লা, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও শহরতলীর আশপাশ গ্রাম্য বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানকার বেশিরভাগ লোকজনেরই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে উদাসীন। যখন তখন মানুষজন গাদাগাদি করে বাজার করছে, এখানে স্বাস্থ্যবিধি মানাতো দূরের কথা মুখে মাস্ক পর্যন্ত পরে না। করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে কমবেশি সবাই জানে, অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে, আবার সেরে উঠছে, করোনায় মারাও যাচ্ছে। তবুও স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে লোকজন চরম উদাসীন!
সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনায় শনাক্ত হয়েছেন ৮৭ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৩০৩ জনের। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় আক্রান্ত শনাক্তের হার প্রায় ২৮.৭১ শতাংশ। এদিকে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন জেলার ৩ উপজেলার ২৯ জন। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাক্ষরিত কোভিড ১৯ রিপোর্ট সূত্রে এই তথ্য জানা যায়। রিপোর্ট অনুযায়ী নতুন করে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৪৪ জনই সদর উপজেলার। এছাড়াও দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৪ জন, বিশ^ম্ভরপুর উপজেলায় ৭ জন, তাহিরপুর উপজেলায় ১০ জন, জামালগঞ্জ উপজেলায় ৯ জন, ধর্মপাশা উপজেলায় ২ জন, ছাতক উপজেলার ৭ জন এবং জগন্নাথপুর উপজেলার ৪ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছাল ৪ হাজার ৯০৫ জনে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে নতুন করে আরোগ্য লাভ করেছেন সদর উপজেলার ৮ জন, জগন্নাথপুর উপজেলার ১১ জন এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ১০ জন। এ পর্যন্ত মোট আরোগ্য লাভ করেছেন ৩ হাজার ৪২২ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ৫২ জন। বর্তমানে আইসোলেসনে আছেন ১,৪৩১ জন। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ৭৬০ জন আইসোলেসনে আছেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায়। এছাড়াও ছাতক উপজেলার ১৩২ জন, বিশ^ম্ভরপুর উপজেলায় ৫৬ জন, তাহিরপুর উপজেলায় ১৪১ জন, জামালগঞ্জ উপজেলায় ৭৮ জন, দিরাই উপজেলার ৭৫ জন, ধর্মপাশা উপজেলার ৩২ জন, দোয়ারাবাজায় উপজেলায় ৩৭ জন, জগন্নাথপুর উপজেলায় ৭৮ জন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ২১ জন এবং শাল্লা উপজেলায় ২১ জন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস শনাক্তে এ পর্যন্ত ২৩ হাজার ২৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে রিপোর্ট পাওয়া গেছে ২২ হাজার ৭৮ জনের। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩৮০ জন। এদিকে এন্টিজেন নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫ হাজার ৫২৫ জনের। এরমধ্যে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫২৫ জন। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় জেলায় মোট শনাক্তের হার ১৭.৭৬ শতাংশ।