আল্লাহর রহমত থেকে কারা কেন নিরাশ হন না

মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৩৮:১৩,অপরাহ্ন ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | সংবাদটি ১১০ বার পঠিতমানবজাতির সৃষ্টির আদিলগ্নে সংঘটিত হযরত আদম ও ইবলিসের ঘটনা কমবেশি আমরা সবাই জানি। মহান রাব্বুল আলামীন যেদিন মানুষ সৃষ্টি করে সমগ্র ফেরেশতাকুলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদমকে সিজদা করতে সেদিন একমাত্র ইবলিস ছাড়া বাকি সবাই আল্লাহর আদেশ পালন করেন। তখন থেকেই মানুষের সঙ্গে শয়তানের শত্রুতা শুরু।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্য। কিন্তু মানুষ সেই সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে প্রতিনিয়ত পাপে নিমজ্জিত হয়। তাঁর নাফরমানি করে। তাই বলে রহমানুর রাহীম তাঁর বান্দাকে ভুলে যান না, বরং তাঁর রহমতের ছায়ায় সর্বদা আশ্রয় দেন, বান্দার নিরাপত্তা দান করেন, লালন-পালন করেন।
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু আমার গুনাহের পরিমাণ অনেক বেশি, আমি আমার জীবনে যত রকমের গুনাহ আছে, তা সবই আমি করেছি। আমি জীবনে অনেক বড় বড় পাপ কামাই করেছি। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিগত এত বছরের সব পাপ কি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন?
সম্মানিত পাঠক! আপনি নিশ্চিত থাকুন, এটি বিশেষ কোনো সমস্যা নয় বরং এটা অনেকেরই সমস্যা যারা তাওবা করতে চায়। গুনাহ যত বড় হোক না কেন, আল্লাহর রহমত ও দয়া তার চেয়ে অনেক বড়। আল্লাহ তাআলা সব ধরনের পাপকেই ক্ষমা করবেন।
আল্লাহ তাআলা কুরআন করীমে স্বীয় বান্দাদের সম্বোধন করে বলেন, বলে দাও যে, [আল্লাহ বলেন] হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর অত্যাচার করেছো, তোমরা আল্লাহ তাআলার রহমত হতে নিরাশ হয়ো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ [অতীতের] সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করবেন; নিশ্চয়ই তিনি বড়ই ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
দুনিয়ার জীবনে বিপদ আসেই। নানান সময় নানান দিক থেকে বিপদ এসে হামলে পড়ে আমাদের ওপর। অর্থসম্পদ, সন্তানাদি, সম্মান-মর্যাদা আক্রান্ত হয় সব কিছুই। দুনিয়ার জীবনে এ বিপদের মুখে পড়ার কথা অবশ্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে- ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব সামান্য ভয় ও ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফসলের কিছুটা ক্ষতি দিয়ে।’ আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও- যাদের ওপর কোনো মুসিবত এলে বলে- ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর আর অবশ্যই আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।’ (সূরা আল বাকারা : ১৫৫-১৫৬)
বোঝা গেল, বিপদ আসবেই। বিপদের মুহূর্তে কী করতে হবে সেই নির্দেশনাও দেয়া আছে এ আয়াতে। কিন্তু বিপদ যখন কিছুটা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা কেটে যাওয়ার মতো কোনো স্বাভাবিক সম্ভাবনা যখন মানুষের সামনে থাকে না, তখন আঘাত হানে হতাশা। হতাশা তাকে আল্লাহর রহমতের কথা ভুলিয়ে দিতে চায়।
আল্লাহর কুদরত থেকে তার দৃষ্টিকে সরিয়ে দিতে চায়। আল্লাহর সীমাহীন অনুগ্রহ এবং দয়াকে আড়াল করে দিতে চায়। অথচ পবিত্র কোরআনের ভাষ্য মতে, ‘মুমিন কখনোই হতাশ হতে পারে না।