আজমিরীগঞ্জে ২৫০ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ আজ
মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:১২:৫৮,অপরাহ্ন ১১ নভেম্বর ২০২১ | সংবাদটি ২৫৯ বার পঠিতহবিগঞ্জের ৭৭ ইউনিয়নের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে শুধুমাত্র আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আজ বৃহস্পতিবার। ভোটের মাঠে রয়েছেন ২৫০ জন প্রার্থী। তন্মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৭৪ জন ও সংরক্ষিত আসনে সদস্য পদে ৬০ জন।
মঙ্গলবার জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ সাদেকুল ইসলাম। তিনি জানান, মোট ভোটার সংখ্যা ৭৪ হাজার ৯৯৪ জন। তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৭ হাজার ৯১৯ জন ও মহিলা ভোটার ৩৭ হাজার ৭৫ জন।
উপজেলা আওয়ামী লীগ একাধিক নেতৃবৃন্দ বলছেন, কোন কোন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়েও বিদ্রোহী প্রার্থী অনেক শক্তিশালী। যে কারণে সেই ইউনিয়গুলোতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভরাডুবির আশঙ্কা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১ নং সদর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম মোবারুল। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সাবেক যুবলীগ নেতা স্বাধীন মিয়া। তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন সরশ। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে জনপ্রিয়তায় নেই তেমন তফাৎ। নৌকার প্রার্থীর পক্ষে যেমন দলীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন তেমনি গোপনে অনেক নেতাকর্মী বিদ্রোহী স্বাধীন মিয়ার পক্ষেও রয়েছেন।
২ নং বদলপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী সুসেনজিৎ চৌধুরী। এই ইউনিয়নে সুসেনজিৎ চৌধুরীকে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন নীলকমল ও অসিম কুমার চৌধুরী। এখানে সুসেনজিৎ চৌধুরীর বেশ জনপ্রিয়তা থাকলেও দুই বিদ্রোহীর চাপে নৌকা ডুবার আশঙ্কা চরম।
৩ নং জলসুখা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রুকসানা আক্তার শিখা। এখানে নৌকার বিদ্রোহী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন সাবেক যুবলীগ নেতা ফয়েজ আহমেদ খেলু। যদিও গত নির্বাচনে বিদ্রোহী হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়। তবে গোপনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী তার পক্ষে রয়েছেন। এখানে বিএনপি নেতা এবিএম জামির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। এছাড়া এই ইউনিয়নে প্রথমদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল শাহজাহান মিয়াকে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় পরবর্তীতে তাকে বাদ দিয়ে রুকসানাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে ক্ষোভ ও অভিমানে শাহজাহান মিয়া আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী খেলুর পক্ষে কাজ করছেন। যে কারণে নৌকার প্রার্থী রুকসানার শুধু হারের শঙ্কা নয়, চরম লজ্জার মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। যদিও শাহজাহান মিয়া দাবি করছেন, দল তার মনোনয়ন ফিরিয়ে নিলেও তিনি নৌকার পক্ষে কাজ করছেন।
৪ নং কাকাইলছেও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মিজবাহ উদ্দীন ভুঁইয়া। এর আগে তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫ বার প্রতিদ্বন্ধিতা করে প্রত্যেকবারই পরাজিত হয়েছেন। তবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে যেমন বিদ্রোহ ছিলো ঠিক তেমনভাবে এবারও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন আশরাফ উদ্দিন। তবে তার সাথে ইউনিয়নের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা রয়েছে। একদিকে ৫ বার পরাজয়ের গ্লানি অন্যদিকে বিদ্রোহীর চাপ। দুইয়ে মিলে এলাকায় তাকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা। যে কারণে ৬ষ্ঠ বারের মতো পরাজয়ের শঙ্কা থেকে যায়।
৫ নং শিবপাশা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তফছির মিয়া। এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী তিনজন। আলী আমজাদ, জাহাঙ্গীর আলম এবং নলিউর রহমান তালুকদার। এছাড়া শক্তিশালীভাবে মাঠে আছেন বিএনপি নেতা মাবুল মিয়া। এর মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী আলী আমজাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। যে কারণে তিন বিদ্রোহী ও এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভিড়ে কূল-কিনারা পাচ্ছে না নৌকা।