দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা দৌঁড়বিদদের অংশগ্রহণে সিলেটে ম্যারাথন

মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৫৩:৪৬,অপরাহ্ন ০৪ ডিসেম্বর ২০২১ | সংবাদটি ৬৫২ বার পঠিতশীতের সূর্য পূব আকাশে উঁঁকি দেয়ার আগেই হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতে নগরের রাজ পথে হাজারো মানুষের সরব উপস্থিতি। শুধু সিলেট নয়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সের দৌড়বিদরা অংশ নেন এই প্রাণের মেলায়।
সিলেট রানার্স কমিউনিটির আয়োজনে সিলেট হাফ ম্যারাথন শুরু হয় শুক্রবার ভোর ৬টায়। দৌড়বিদরা সিলেট ঐতিহ্যবাহী ক্বীন ব্রিজ এলাকা থেকে দৌড় শুরু করেন। মালনী ছড়া চা বাগান হয়ে শহরতলীর ২২ টিলায় ঘুরে ২১.১ কিলোমিটার দৌড় সিলেট আন্তজার্তিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ফিনিস লাইনে এসে সমাপ্ত হয় ।
২১.১ কিলোমিটার এবং ১০ কিলোমিটার এই দুটি বিভাগে নারী-পুরুষসহ ১২০০ দৌড়বিদ অংশগ্রহন করেন। পুরুষদের ১০ কিলোমিটার বিভাগে ২য় স্থান অর্জন করেন গোলাম রাহাত এবং চ্যাপিয়ন হন সাজ্জাদ হোসেন স্নিগ্ধ।
পুরুষদের ২১.১ কিলোমিটার বিভাগে ৩য় হয়েছেন. মো আলামীন, ২য় মো: আসিফ বিশ্বাস ও চ্যাপিয়ন হন মো এলাহী সরদার।
নারীদের ২১.১ কিলোমিটার বিভাগে ৩য় হয়েছেন নাসিফা জাহান ওয়াহাব, ২য় হয়েছেন মৌসমী আক্তার তন্নি, চ্যাপিয়ন হয়েছেন নাসরিন বেগম।
অন্য দিকে নারীদের ১০ কিলোমিটার বিভাগে ৩য় হয়েছে ১১ বছর বয়সী স্নেহা জান্নাত, ২য় হয়েছে ১১ বছর বয়সী আফসানা হালিমা,আর চ্যাপিয়ন হয়েছে আরেক ছোট দৌড়বিদ সাইদা আক্তার রিনা। আর ৫৬ বছর বয়সী উর্দ্ধ নারী বিভাগে চ্যাপিয়ন হয়েছেন মেরিয়ান চৌধুরী। পুরুষদের ৫৬ বছর বয়সী উর্দ্ধ বিভাগে ২য় হয়েছেন ৭১ বছর বয়সী নৃপেন চৌধুরী।
১.১ কিলোমিটার জেনারেল নারীতে প্রথম নাসরিন বেগম, ২য় মৌসুমি আক্তার এপি এবং ৩য় নার্গিস জাহান ওহাব।
২১.১ কিলোমিটার জেনারেল পুরুষ বিভাগে ১ম হন মোঃ এলাহি সরদার, ২য় মোঃ আসিফ বিশ্বাস এবং ৩য় হন মো আল আমিন। ১০ কিলোমিটার জেনারেল নারীতে ১ম সাইদা আক্তার রিনা, ২য় আফসানা হালিমা এবং ৩য় স্নেহা জান্নাত। ১০ কিলোমিটার পুরুষে ১ম সাজ্জাদ হোসেন, ২য় গোলাম রাহাত তোফায়েল এবং ৩য় রাসু আহমেদ। ১০ কিলোমিটার (৪৫-৫৫) পুরুষ ১ম হন মোহাম্মদ ওয়াহাব খান, ২য় রেজাউল করিম তুহিন এবং ৩য় মোঃ পেয়ারুল ইসলাম। ১০ কিলোমিটার (৪৫-৫৫) নারীতে ১ম হন শাহ তামান্না সিদ্দিকা, ২য় শাহ ফাহমিদা সিদ্দিকা এবং ৩য় নিপা দাস। ১০ কিলোমিটার (৫৬) পুরুষে ১ম হন মো আবু নাসের, ২য় নৃপেন চৌধুরী এবং ৩য় সচীন্দ্র চন্দ্র অধিকারী।
৫৪ বছর বয়সী হাসিনা আক্তার বলেন, দীর্ঘ দিন থেকে আমি ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগছিলাম। কিন্তু আমি যখন রানিং শুরু করলাম আমার অনেক ভালো লাগতে শুরু করলো। মানুষের সুস্থ থাকার জন্য এটা খুব জরুরী।
নৃপেন চৌধুরী বলেন, ৭১ বছর বয়সেও আমি দৌড়াতে পারি। আমি শারীরিক ভাবে সুস্থ। আমি সবাইকে হাটাঁ এবং দৌড়ানোর জন্য অনুরোধ জানাই।
আয়োজক কমিটির সদস্য এবং সিলেট রার্নাস কমিউনিটির এডমিন ডা ওরাকাতুল জান্নাত বলেন, তরুণ সমাজকে মাদক ও খারাপ দিক থেকে বিরত রাখতে খেলাধুলার বিকল্প নেই। আমরা প্রতি বছরই ব্যতিক্রমী আয়োজনের মাধ্যমে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষকে দৌড়ের প্রতি আকৃষ্ট করছি। এই ধরণের আয়োজনে একেকটা জায়গায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দৌড়বিদ আসেন যা দেশের পর্যটন শিল্পেও ব্যাপক ভূমিকা রাখে। আমরা পরিবেশ বান্ধব এই ধরণের আয়োজন অব্যাহত রাখতে চাই। তিনি জানান, এই ম্যারাথন সফল করার জন্য আমাদের নিজস্ব ১৮০ জন ভলান্টিয়ার কাজ করেছে যারা রোড সেফটির পাশাপাশি ফার্স্ট এইড সাপোর্ট প্রদান করেন। ম্যারাথন সফলে সব ধরনের সহযোগিতার জন্য তিনি বিশেষ ধন্যবাদ জানান সিলেটের প্রশাসনকে।
সকাল ১০টায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকারিয়া। তিনি বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট, মেডেল এবং নগদ টাকা উপহার তুলে দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।