চা বিক্রেতার ব্যতিক্রমী প্রচারণা, ‘মাদক ছেড়ে চা ধরুন’

সেরাগ্রাহক সম্মাননা ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অর্ধেক দামে চা বিক্রি করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ময়মনসিংহের গৌরীপুরের চা বিক্রেতা হারুন মিয়া (২৩)। সেই ধারাবাহিকতায় ১৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক চা দিবস উপলক্ষে মাদকবিরোধী প্রচারণা ও অর্ধশতাধিক গ্রাহককে সেরা চাপ্রেমী সম্মাননা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন এই চা বিক্রেতা।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে ‘মাদক ছাড়ুন, চা ধরুন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে হারুন টি হাউজের ব্যানারে চা প্রেমীদের নিয়ে পৌর শহরে মাদকবিরোধী শোভাযাত্রা বের হয়।

শোভাযাত্রা শেষে শহরের হারুনপার্ক এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন চত্বরে হারুন টি হাউজের নিয়মিত গ্রাহকদের মধ্য থেকে সেরা চাপ্রেমী সম্মাননা দেয়া হয়।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান প্রধান অতিথি থেকে সেরা চাপ্রেমী সম্মাননা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘উপজেলায় অনেক চা বিক্রেতা থাকলেও হারুন ব্যতিক্রম কাজের মধ্য দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক চা দিবসে মাদক ছেড়ে চা ধরার যে আহ্বান হারুন জানিয়েছে সেটা প্রশংসনীয়’।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউএনও হাসান মারুফ বলেন, ‘মাদক নির্মূল করা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব মনে করে বসে থাকলে চলবে না। মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একজন চা বিক্রেতা হয়ে হারুন মাদকের বিরুদ্ধে যে প্রচারণা করেছে সেজন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

চা বিক্রেতা হারুন মিয়া বলেন, ‘মাদক মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। কিন্ত চা পানের অনেক উপকারিতা আছে। চা ছাড়া আড্ডা ছাড়া যেমন আড্ডা জমে না। তেমনি ক্লান্তি দূর করতে এককাপ চায়ের তুলনা হয় না। আমার মত ক্ষুদ্র মানুষের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে যারা অনুষ্ঠানে এসেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদর মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসার উপাধ্যক্ষ এমদাদুল হক, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল কাদির, ব্যবসায়ী শ্যামল বসাক, যুগান্তর প্রতিনিধি মো. রইছ উদ্দিন, প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, আজকালের খবর প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান বোরহান, কবি সেলিম আল রাজ, সহকারী শিক্ষক আমিরুল মোমেনীন, বিজন সরকার, সার্ডের ম্যানেজার আব্দুল বাসেদ, পৌর স্বজন সমাবেশের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান মুক্তা প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, হারুন মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সতীষা এলাকায়। পৌর শহরের কালীখলা এলাকায় চায়ের দোকান দিয়ে পরিবারের হাল ও ছোট বোনের পড়াশোনার খরচ চালান তিনি। চা বিক্রির পাশাপাশি পড়াশোনা করে হারুন নিজেও চলতি বছর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছেন।