থ্রি হুইল বন্ধে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের অভিযান
মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:০১:১৯,অপরাহ্ন ২১ ডিসেম্বর ২০২১ | সংবাদটি ২৬০ বার পঠিতঢাকা সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড থেকে শুরু করে আশুগঞ্জ, বিজয়নগর সাতবর্গ পর্যন্ত মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থেকে বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় থেকে কসবা উপজেলার কুটি চৌমুহনী কালামোড়া সেতু পর্যন্ত ৪৩ কিলোমিটার এলাকা খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার অধীনে। এর মধ্যে সরাইল নাসিরনগর উপজেলার যাত্রীদের সুবিধার্থে মহাসড়কের সরাইল কুট্টাপাড়া মোড় থেকে খাঁটিহাতা মোড় পর্যন্ত থ্রি-হুইলার চলার জন্য বিশেষ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মো.শাহজালাল আলমের নেতৃত্বে হাইওয়ে থানা পুলিশ সদস্যরা ঢাকা সিলেট মহাসড়কে থ্রি হুইলার অটোরিকশা, ইজিবাইক ও ইঞ্জিনচালিত তিন চাকার যান মহাসড়কে উঠলেই ব্যবস্থা নিচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে হাইওয়ে পুলিশের নিয়মিত অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে নিষিদ্ধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে। পরে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুসারে দুই হাজার পাঁচশত টাকা প্রতি গাড়িকে জরিমানা করে মামলা দেওয়া হয়।
এদিকে অভিযানের ফলে মহাসড়কের পাশে থাকা স্থানীয় চলাচলকারীদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। তাদের অভিযোগ অভিযানের কারণে তাদের নানা রকম হয়রাণির শিকার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে মহসড়কের গা ঘেঁষা বাসিন্দাদের চলাচলের থ্রি হুইলার ছাড়া অন্য বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তারা জানান, ঘর থেকে বের হলেই মহাসড়ক। প্রত্যাহিক জীবনের কাজ সারতে মহাসড়কে উঠতেই হয়। অল্প অল্প জায়গা পেরুতে ত আর বাস পাওয়া যাবে না। এখন রিক্সা, অটোরিক্সাসহ থ্রি হুইলার বন্ধ করে দেয়ায় পায়ে হেটে মহাসড়কের উপর দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হচ্ছে।
এছাড়া তারা বলেন, অনেক চালক রয়েছেন যাদের মহাসড়ক অতিক্রম করেই সিএনজি অটোরিক্সার জন্য গ্যাস আনতে যেতে হয়। তাদের এখন কি হবে। গ্যাসের অভাবে গাড়ি চালাতে না পারলে সংসার চলবে কিভাবে।
আমেনা বেগম নামে এক রিকশা চালকের মা বলেন, আমার বাড়ি ইসলামাবাদ মহাসড়কের পাশে, বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মহাসড়কে চলতে হয়। আমি হতদরিদ্র মানুষ দুই দিন আগে আমার ছেলের রিকশাটি ধরে মামলা দেয়। কোনো রকম ভাবে টাকা জোগাড় করে মামলা ভাঙিয়ে আনি। আজ আবারও ধরা পড়ে।
সিএনজি চালক রুবেল বলেন, পেটের দায়ের সিএনজি নিয়ে মহাসড়কে দিয়ে গ্যাস নিতে যাই। তারপর আবার খেতে হয় মামলা।
বিভিন্ন কোম্পানি ভ্যান চালক বলেন, কোম্পানি চিপস, বিস্কুট, ভ্যান গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি দিয়ে নেওয়া যায়না। কোম্পানির মাল বিভিন্ন জায়গায় দোকানে দোকানে ডেলিভারি করতে হয়। তাই বাধ্য হয়ে ভ্যান গাড়ি দিয়ে মহাসড়কে দিয়ে যেতে হয়।
তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া শিবানী বলেন, আমরা হিজড়াদের গাড়ি কোনো পুলিশ ধরে না, অথচ ওই বেটা পুলিশ মহাসড়কে উঠার কারণে মামলা দিয়েছে।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহজালাল আলম বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় আমরা মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহন আটকের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। আটককৃত থ্রি-হুইলারের বিরুদ্ধে ডাম্পিং ও প্রসিকিউশন দাখিল করে জরিমানা করা হয়েছে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।