হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে শতাধিক আহত

মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০৩:৩০,অপরাহ্ন ২২ ডিসেম্বর ২০২১ | সংবাদটি ১৫১ বার পঠিতহবিগঞ্জে সমাবেশকে ঘিরে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশ ব্যাপক রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ অন্তত শতাধিক আহত হয়েছেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব আহমেদ রিংগনসহ কয়েকজনকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। বাকিদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশ নিয়ে চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে জেলা শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় বিএনপির কার্যলয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে। সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকর্মীরা। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন।
সকালে শায়েস্তানগর প্রবেশমুখে রাস্তায় সমাবেশ করায় এতে বাঁধা দেয় পুলিশ। এ নিয়ে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা যেন কার্যালয়ের সামন থেকে প্রধান রাস্তায় বের হতে না পারে সেজন্য পুলিশ রাস্তার মুখে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে।
বেলা দেড়টার দিকে ব্যারিকেড ভেঙে যুবদল নেতাকর্মীরা প্রধান সড়কে আসতে চাইলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এ সময় পুলিশ ও যুবদল নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় শায়েস্তানগর পয়েন্ট রনক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এক পর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে পিছু হটে বিএনপি নেতাকর্মীরা। কিছুক্ষণ পরে আবারও পুলিশের উপর ইটপাটকেন নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় আরেক দফা সংঘর্ষ বাঁধে।
বেলা আড়াইটার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তা ছেড়ে চলে যায়।
সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত শতাধিক লোকজন আহত হন। এর মধ্যে গুরুত্বর আহত অবস্থায় জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব আহমেদ রিংগনসহ কয়েকজনকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। বাকিদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
গুরুত্বর আহতদের মধ্যে, জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুষার আহমেদ, জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর শফিকুর রহমান সিতু, পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ আশফাক, মোশাহিদ আহমেদ।
সংঘর্ষের পর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জি কে গউছের বাসভবন সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন। এ সময় তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশ নিয়ে চিকিৎসা করাতে সরকার যে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে সেই বাঁধা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজকে আমরা হবিগঞ্জে সমাবেশ করতে এসেছিলাম। কিন্তু সরকারের নির্দেশে হবিগঞ্জের প্রশাসন আমাদেরকে সমাবেশ করতে দেয়নি। সমাবেশ আসতে বিভিন্ন স্থানে আমাদের নেতাকর্মীদের বাঁধা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের সমাবেশ মঞ্চের চারপাশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করেছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী গুরুত্বর আহত হয়েছেন।’
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শৈলেন চাকমা বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তায় সমাবেশ করতে চেয়েছে। যে কারণে আমরা তাদেরকে বাঁধা দেই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শত শত বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশরে উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তবে কি পরিমাণ রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করা হয়েছে সেটির হিসেব এখনও করা হয়নি।’