সিলেট চেম্বারের নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ
মিলান বার্তা ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৫৭:৫৩,অপরাহ্ন ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ | সংবাদটি ১৩৫ বার পঠিতসিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসসিসিআই) এর নির্বাচন শেষ হওয়ার পর এবার নতুন কমিটির কার্যক্রমের উপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্রিক অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চেম্বারের নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর স্থগিতাদেশ জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ ১৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালককে (বাণিজ্য সংস্থা) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক আব্দুর রহমান জামিলের একটি রিট আবেদন (নং-১৩১০৯/২০২১) এর শুনানী শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহমান ও বিচারপতি মুস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
জানা গেছে, গত ১১ ডিসেম্বর সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিলেট চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন সম্পন্ন হয়। নির্বাচনে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একপেশে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের অভিযোগ করে আসছিলো একটি পক্ষ। সর্বোপরি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুই প্যানেল সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ ও সিলেট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ থেকে ১১ জন করে পরিচালক নির্বাচিত হন। গত ১৩ ডিসেম্বর নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্যে থেকে সভাপতি ও দুই সহ-সভাপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রেসিডিয়াম কমিটি গঠনকে কেন্দ্র উত্তপ্ত হয়ে পড়ে সিলেট। চেম্বার ভবনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। চেম্বারের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গভীর রাত পর্যন্ত মিছিল মিটিং হয়। শেষমেশ পুলিশী প্রহরায় চেম্বার ভবন ছাড়তে হয় নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিলকে।
অন্যদিকে, প্রেসিডিয়াম নির্বাচনে সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন আব্দুর রহমান জামিল। তবে বিধিমালা ভঙ্গের অভিযোগে জামিল ও তার প্যানেলের সহ-সভাপতি প্রার্থী হুমায়ুন আহমদের প্রার্থীতা বাতিল করে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড। এর প্রতিবাদে প্রেসিডিয়াম নির্বাচন বর্জন করেন সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ থেকে বিজয়ী ১১ পরিচালক। একপক্ষের বর্জনের পর ওই রাতেই সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের প্রার্থী তাহমিন আহমদকে সভাপতি এবং সহ-সভাপতি পদে ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ ও আতিক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
এরপর গত সোমবার চেম্বারের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালকের (বাণিজ্য সংস্থা) কাছে আবেদন করেন আব্দুর রহমান জামিল। পরবর্তীতে তিনি চেম্বার নির্বাচন পরবর্তী কার্যক্রমের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরসহ নির্বাচন পরবর্তী সকল কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দেন।
এ ব্যাপারে আব্দুল রহমান জামিল গণমাধ্যমকে বলেন, চেম্বার নির্বাচনের শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনের আচরণ ছিলো পক্ষপাতমূলক। তারা অন্যায়ভাবে একটি পক্ষের হয়ে কাজ করেছেন এমনকি শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটি পক্ষকে বিজয়ী করেছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছি এবং হাইকোর্টে রিট করতে বাধ্য হয়েছি। এই অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চেম্বারের নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আব্দুর রহমান জামিলের রিটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিচালক (বাণিজ্য সংস্থা), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চেয়ারম্যান এফবিসিসিআই’র সালিশ ট্রাইব্যুনাল, চেয়ারম্যান সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনী আপিল বোর্ড, নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিল, দুই সদস্য অ্যাডভোকেট মিসবাউর রহমান আলম, মো. সিরাজুল ইসলাম শামীম এবং সিলেট চেম্বারের সভাপতিকে বিবাদী করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিল বলেন, আমরা গঠনতন্ত্র ও সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন পরিচালনা করেছি। উচ্চ আদালত ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। চেম্বারের আইন অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে সমঝোতার জন্য রিটে উল্লেখ করা বিবাদীপক্ষের সাথে আমরাও থাকবো।